চট্টগ্রামে শিশুদের ’হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ’ জনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.বাসনা মুহুরীর মতে,এই রোগের জন্য বিশেষ কোন চিকিৎসা নেই এবং তার প্রয়োজনও নেই।

Oct 29, 2024 - 20:01
Nov 14, 2024 - 15:53
 0  25
চট্টগ্রামে শিশুদের ’হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ’ জনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে
চট্টগ্রামে শিশুদের ’হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ’ জনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে

চট্টগ্রাম নগরিতে শিশুরা “হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ”নামক একটি বিশেষ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে অনেকে একে জলবসন্ত রোগের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলছে। যার ফলে খাওয়াচ্ছেন বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিবায়েটিক,যা শিশুদের আরো মৃত্যুর মুখে ঢেলে দিচ্ছে। কিন্তু সঠিক পদ্বতি ও নিয়মাবলি অবলম্বনের মাধ্যমে এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব।

সাধারণত,এই রোগটি একটি  ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় অন্যরা ও এতে দ্রুত সংক্রামিত হচ্ছে। তাছাড়াও ডাক্তাররা বলেছেন, শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও এই রোগে সংক্রমন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই কোন প্রকার লক্ষণের সম্মুখীন হলে অ্যান্টিবায়েটিক সেবন না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে।

প্রায় ১৫-২০ জন শিশু প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে এই রোগের উপসর্গ নিয়ে আসছে। অনেক অভিভাবক এটি নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে জলবসন্তের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন।

চট্টগ্রামে  জিইসি এলাকায় দেড় বছর বয়সী শিশু দাউদের শরীরে তার মা রত্না বেগম কয়েকদিন যাবৎ কিছু ফুসকুড়ি দেখতে পান। তার এলাকায় বাড়ির পাশে এক এমবিবিএস ডাক্তারকে দেখালে  তিনি তা জলবসন্ত বা চিকেন পক্স বলে ধারনা করে কিছু ওষুধ দেন। কিন্তু কিছুদিন ওষুধ সেবন করার পর তার  শিশু দাউদের সর্দি , কাশি ও জ্বর দেখা দেয়। পরর্বতীতে, তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে দেখালে ডাক্তার এটি‘হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ বলে উল্লেখ্য করেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেলে শিশু বহির্বিভাগের একজন আবাসিক চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলামের একটি সংবাদ পত্রিকায় কিছু কথোপকথন এর মাধ্যমে জানা যায় যে ‘হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ এবং জলবসন্ত দুটোই ভাইরাসজনিত রোগ তবে এই দুটি  রোগের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন: হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে গলা ব্যথা, জ্বর ,খাবারের অরুচি ,জিহ্বায় ঘায়ের মত ফুসকড়ি হয় এবং  হাত ও পা গোলাপী রঙ্গের বর্ণ ধারন করে এছাড়াও হাত ,পা এবং জিহ্বায়  ফুসকুড়ির মতো পানিযুক্ত গোটা দেখা দেয়।

ডা. সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে আরো জানা যায় ‘কক্সেকি নামের এক ধরনের ভাইরাসের কারণে মূলত এ রোগ হয়ে থাকে। এই ভাইরাস আক্রমনের চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে রোগীর শরীরে নানা লক্ষণ দেখা যায় প্রয়োজনে শিশুকে হসপিটালাইজড করা লাগতে পারে। শিশুর নাকের পানি, লালা, ফোসকা ফাটা পানি, হাঁচি-কাশি এমনকি আক্রান্ত শিশুর পায়খানার মাধ্যমেও অন্যরা সংক্রমিত হতে পারে।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.বাসনা মুহুরীর মতে,এই রোগের জন্য বিশেষ  কোন চিকিৎসা নেই এবং তার প্রয়োজনও নেই। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পুষ্টি জনিত খাবার ও সুষ্ঠ পরিচর্যার ফলে সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব। এছাড়া ‘জ্বর থাকলে নির্দিষ্ট মাত্রার প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে । তবে দ্রুত রোগ প্রতিরোধ করতে  শিশুদের বারবার ভালো করে হাত ধোয়া শেখাতে হবে ঘর ও ঘরের মেঝে, খেলনা পরিষ্কার রাখতে হবে।  এই ভাবে সাস্থ্যবিধি মেনে চললে ‘হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ’ডিজিজ থেকে এড়ানো সম্ভব। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow