মাদকের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা
মাদকদ্রব্য বলতে বোঝানো হয় এমন সব দ্রব্য যা খেলে নেশা হয়। এগুলো হলো গাঁজা, ফেনসিডিল, চরস, ভাঙ, গুল, জর্দা, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, মদ, ইয়াবা ইত্যাদি।
মাদকের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। মাদকদ্রব্য বলতে বোঝানো হয় এমন সব দ্রব্য যা খেলে নেশা হয়। এগুলো হলো গাঁজা, ফেনসিডিল, চরস, ভাঙ, গুল, জর্দা, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, মদ, ইয়াবা ইত্যাদি। যখন কেউ এসব দ্রব্যাদির উপর নেশাগ্রস্থ হয় , তখনই তাকে মাদকাসক্ত বলা হয়।
কিশোর-কিশোরীরা কিভাবে নেশাগ্রস্থ হয়
বন্ধু বান্ধবের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।
বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।
ভুল তথ্য, হতাশা, কৌতূহলবশতঃ।
আদর্শ মনে করে এমন কার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।
স্মার্ট দেখানোর জন্য।
মাদকাসক্তির কুফল বা ক্ষতিকর দিকগুলো
মাদকের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতার ফলে শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষতি হয়ে থাকে।
মাদকের প্রভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি
শেখার ক্ষমতা এবং কাজের দক্ষতা কমিয়ে দেয়।
বিচার-বিবেচনা, ভুল ঠিক বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে যায়, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
আবেগ নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকেনা।
উগ্র আচরণের জন্ম দেয়।
মানসিক পীড়ন বাড়িয়ে দেয়, আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়।
মাদকের প্রভাবে শারীরিক ক্ষতি
মস্তিষ্ক ও শ্বাসযন্ত্রের ক্ষমতা ও শরীরের সূক্ষ্ম অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং স্মৃতি শক্তি কমিয়ে দেয়।
স্বাভাবিক খাদ্য অভ্যাস নষ্ট করে।
যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
মাদকের ভয়াবহতার ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি
পরিবারে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়।
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ বেড়ে যায়।
কর্মক্ষম জনশক্তি কমে যায়।
মাদকাসক্তির প্রতিরোধ ও এর প্রতিকার কিভাবে করা যায়
পুরো পৃথিবীতে মাদক ছড়ানো
আফিম বানানো হয় পপি গাছের ফুল থেকে। একই সাথে ব্যাথা কমানো আর আনন্দময় অনভূতি তৈরী করতে এই আফিম ব্যবহর করা হয় খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে। উনিশ শতাব্দীতে এই আফিম থেকে আলাদা করা হয় “মরফিন”। পরে পরীক্ষাগারে বানানো হয় হিরোইন।
১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে ওষূধ কোম্পানিগুলো ব্যাথানাশক হিসাবে এই মরফিন জাতীয় দ্রব্যের ব্যাপক প্রচলন করে। নেশা সৃষ্টিকারী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে লুকিয়ে এর প্রচলন করা হয়। যার ফলে এই মাদকের কবলে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।
মস্তিষ্কের কোষে এন্ডোরফিন নামক রাসায়নিক ব্যাথার অনুভূতি জাগায়। এই আফিম জাতীয় মাদক এন্ডোরফিনের রিসেপ্টরগুলোকে বন্ধ করে দেয়। সাথে মস্তিষ্ককে ডোপামিন আর এড্রেনালিন তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে নিজের মধ্যে ভালো লাগা শুরু হয়।
সময়ের সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষে আফিম জাতীয় পদার্থের প্রতি টলারেনস বাড়ে। ফলে একই অনূভুতি পেতে অনেক বেশি মাদকের প্রয়োজন হয়। জন্মায় আসক্তি।
মাদকের ব্যবহার বন্ধ করতে গেলে পেশি ব্যাথা, বমি, জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, ডিপ্রেশন সহ বেশ কিছু সমস্যায় ভোগে রোগী। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ বেগ পেত হয়।
মাদকের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা এবং মাদক প্রতিরোধে পরিবার আর সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পারিবারিক এবং সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা, পরিমিত জীবন যাপন, বন্ধু নির্বাচন, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদি মাদকাসক্তি প্রতিরোধ আর প্রতিকারের পথ।
What's Your Reaction?